Thursday, October 2, 2025

নীরব ক্যামেরার ছায়া

নীরব ক্যামেরার ছায়া
Page 1 / 10 অধ্যায় ১: নীরব ক্যামেরা। রাত তখন প্রায় দুটো। দিল্লির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে এক তীব্র উত্তেজনা। নিখোঁজ টেক-উদ্যোক্তা মীরা দত্তার ফাইল খোলা। কিন্তু টেবিলের উপর রাখা আছে শুধু মীরার অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে থেকে সংগ্রহ করা একটি 'ব্ল্যাঙ্ক' (Blank) CCTV ফুটেজের হার্ড ড্রাইভ। এসিপি বর্তিকা সিং জানেন, অপরাধী (ডঃ ভেক্টর) একটি সাইবার-খেলা শুরু করেছে।
Page 2 / 10 'হার্ড ড্রাইভটি 'ব্ল্যাঙ্ক' দেখালেও, ফুটেজটি একটি অত্যাধুনিক "ভিডিও ইনভিজিবিলিটি ফিল্টার" দিয়ে আড়াল করা ছিল, ম্যাডাম। কিন্তু এর ডেটা-রুট বিশ্লেষণ করে একটি বিশেষ প্যাটার্ন পাওয়া গেছে—"আমি ডেটা নই, আমি সময়ের দৃশ্য।"' সাব-ইন্সপেক্টর নীরজ কুমার দ্রুত রিপোর্ট করেন। ডঃ ভেক্টরের এই চ্যালেঞ্জ বর্তিকার পেশাদারিত্বে আঘাত করে।
Page 3 / 10 ডঃ ভেক্টর, একসময় মীরার বাবার সহকর্মী ও ক্রোনো-ড্রাইভ প্রযুক্তির সহ-উদ্ভাবক ছিলেন। তিনি শহরের প্রতিটি কোণের CCTV নেটওয়ার্ক এবং তার দুর্বলতা জানেন। 'নীরজ, আমরা তাকে তার নিজের মাঠে চ্যালেঞ্জ জানাবো। শহরের প্রতিটি CCTV ফিডকে একটি একক 'লাইভ টাইমলাইন'-এ একত্রিত করো। সে হয়তো তার নিজস্ব তৈরি কোনো 'দৃশ্য-বিভ্রমের ছায়া' ধরে পালাচ্ছে।' বর্তিকা নির্দেশ দেন।
Page 4 / 10 অধ্যায় ২: ফ্রেমে ফ্রেমে পিছু ধাওয়া। নীরজ তার অ্যাডভান্সড AI অ্যালগরিদম ব্যবহার করে একটি বিশাল ডেটা-ফ্লোতে একটি অস্বাভাবিক 'ব্লিপ' (blip) খুঁজে পায়—যা একটি পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের দিকে নির্দেশ করছে। 'সে একটি 'পিক্সেল-ডিফর্মেশন টুল' ব্যবহার করছে, ম্যাম, কিন্তু তার গমনপথের প্রতি ফ্রেমে ০.০০৫% পিক্সেল ডিস্টর্শন ধরা পড়েছে,' নীরজ বলে।
Page 5 / 10 'সেই ০.০০৫% ডিস্টর্শনই আমাদের পথ দেখাবে। এটা নিশ্চিত ফাঁদ হতে পারে। নীরজ, তোমার কাছে কি সেই 'টাইম-ল্যাপস রিভার্সাল' টুলটি আছে, যা প্রতিটা ক্যামেরার ব্যাকডেটেড স্টোরেজ থেকে এক সেকেন্ডের পূর্বের দৃশ্য ফিরিয়ে আনতে পারে?' বর্তিকা প্রশ্ন করেন। দৃশ্যমানতা বন্ধ করা জরুরি। ভেক্টরকে বিশ্বাস করাতে হবে যে তার বিভ্রম কাজ করেছে।
Page 6 / 10 নীরজ দ্রুত টুলটি প্রশাসনিক ভবনের নিকটস্থ CCTV নেটওয়ার্কে প্রয়োগ করে। ওয়ার্কশপটি খালি দেখাচ্ছিল, কিন্তু এক সেকেন্ডের রিভার্সালে একটি ভাঙা জানালার পাশে মীরার ওড়নার একটি কোণা দ্রুত সরে যাওয়ার আবছা দৃশ্য ধরা পড়ে। তাতে একটি সাংকেতিক অক্ষর লেখা: 'গ্রা' (গ্রা - Gra, for Gradient). ভেক্টর জানত তারা রিয়াল-টাইম ফুটেজ বিশ্লেষণ করবে।
Page 7 / 10 'গ্রেডিয়েন্ট…অর্থাৎ উল্লম্বতা। উঁচু ভবন, লিফট, বা সিড়ি। সে হয়তো ওই পুরনো ভবনের সবচেয়ে উঁচু ফ্লোরের সার্ভার রুমে লুকিয়ে আছে, যেখানে পুরোনো কেবলগুলোর নেটওয়ার্ক সবচেয়ে জটিল। এটা তার শেষ আশ্রয়।' বর্তিকা নিজের টিমের কাছে নির্দেশ দেন: 'তিনটি দল, দ্রুত ও নীরব প্রবেশ। কোনো ঝুঁকি নয়। মীরা এবং আমাদের তথ্য, দুটোই অক্ষত চাই।'
Page 8 / 10 অধ্যায় ৩: শেষ দৃশ্য। পুলিশ দল সতর্কভাবে প্রশাসনিক ভবনের গোলকধাঁধায় প্রবেশ করে। প্রতিটি ফ্লোরে উত্তেজনা। নীরজ একটি কাছাকাছি মনিটরিং স্টেশন থেকে পুরো সাইটের উপর নজর রাখছে। হঠাৎ একটি সার্ভার রুমের দরজার সামনে একটি 'পিক্সেল-ডিসপ্লেসমেন্ট' সংকেত দেখা দেয়।
Page 9 / 10 সার্ভার রুমে প্রবেশ করে বর্তিকা দেখেন, ভেক্টর মীরাকে ছেড়ে একটি অব্যবহৃত ডেটা পোর্টের দিকে ছুটছে। সে দ্রুত পোর্টটিতে তার 'ভিডিও ইনভিজিবিলিটি ফিল্টার' যুক্ত করে একটি 'ডিজিটাল ওড়না' (Digital Veil) সক্রিয় করার চেষ্টা করে। বর্তিকা তার দিকে ছুটে না গিয়ে শুধু নীরব ক্যামেরার দিকে একটি বিশেষ হাত-সংকেত দেন।
Page 10 / 10 উপসংহার: দৃশ্যত ধরা। বর্তিকার সংকেত দেখে, নীরজ তৎক্ষণাৎ দূর থেকে সেই পোর্টের সংযোগে একটি 'সিগন্যাল জ্যামার' সক্রিয় করে। ভেক্টরের পালানোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। একটি কঠিন লড়াইয়ের পর, বর্তিকা সিং ভেক্টরকে নিরস্ত্র করে। মীরা দত্তাকে নিরাপদে খুঁজে পাওয়া যায়। পুলিশ যখন ডঃ ভেক্টরকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, সে শুধু হাসছিল। প্রযুক্তির ছায়াপথ জয় হলেও, প্রতিটি ক্যামেরার লেন্স যে একটি নীরব সাক্ষী, সেই সত্যকে সে অস্বীকার করতে পারেনি।

No comments:

Post a Comment

নীরব ক্যামেরার ছায়া

নীরব ক্যামেরার ছায়া Page 1 / 10 অধ্যায় ১: নীরব ক্যামেরা। রাত তখন প্রায় দুটো। দিল্লির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে এক তীব্র উত্তেজনা। নিখোঁজ ট...